বাচ্য কাকে বলে
- নজরুল ‘অগ্নিবীণা’ লিখেছেন।
- রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক ‘অগ্নিবীণা’লিখিত হয়েছে।
- আমার খাওয়া হলো না ।
ওপরের প্রথম বাক্যে কর্তার, দ্বিতীয় বাক্যে কর্মের, তৃতীয় বাক্যে ক্রিয়ার প্রাধান্য রয়েছে। বাক্যের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় ‘বাচ্য’।
বাচ্য প্রধানত তিন প্রকার : (১) কর্তৃবাচ্য (২) কর্মবাচ্য ও (৩) ভাববাচ্য।
কর্তৃবাচ্য কাকে বলে
যে বাক্যে কর্তার অর্থ-প্রাধান্য রক্ষিত হয় এবং ক্রিয়াপদ কর্তার অনুসারী হয়, তাকে কর্তৃবাচ্যের বাক্য বলে। যেমন— ছাত্ররা অঙ্ক করছে।
কর্মবাচ্য কাকে বলে
যে বাক্যে কর্মের সাথে ক্রিয়ার সম্বন্ধ প্রধানভাবে প্রকাশিত হয়, তাকে কর্মবাচ্য বলে। যেমন-
শিকারি কর্তৃক ব্যাঘ্র নিহত হয়েছে। |
ভাববাচ্য বলে
যে বাচ্যে কর্ম থাকে না এবং বাক্যে ক্রিয়ার অর্থই বিশেষভাবে ব্যক্ত হয় তাকে ভাববাচ্য বলে। যেমন-
তোমার দ্বারা (কর্তায় তৃতীয়) এ কাজ হবে না। | আমার (কর্তায় ষষ্ঠী) খাওয়া হলো না। |
বাচ্য পরিবর্তন
নিয়ম : কর্তৃবাচ্যের বাক্যকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে- (১) কর্তায় তৃতীয়া (২) কর্মে প্রথমা বা শূন্য বিভক্তি এবং (৩) ক্রিয়া কর্মের অনুসারী হয়।
কর্তৃবাচ্য | ভাববাচ্য |
আশরাফ পুস্তক পাঠ করছে। | আশরাফ কর্তৃক পুস্তক পঠিত হচ্ছে। |
খোদাতায়ালা বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন। | বিশ্বজগৎ খোদাতায়ালা কর্তৃক সৃষ্ট হয়েছে। |
বিদ্বানকে সকলেই আদর করে। | বিদ্বান সকলের দ্বারা আদৃত হন। |
বি.দ্র: কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়া অকর্মক হলে সেই বাক্যের কর্মবাচ্য হয় না।
কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্য
কর্তৃবাচ্যের বাক্যকে ভাববাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে-
(১) কর্তায় ষষ্ঠী বা দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় এবং (২) ক্রিয়া নাম পুরুষের হয়। যেমন-
কর্তৃবাচ্য | ভাববাচ্য |
তোমরা কখন এলে? | তোমাদের কখন আসা হলো? |
তুমিই ঢাকা যাবে | তোমাকেই ঢাকা যেতে হবে। |
আমি যাব না। | আমার যাওয়া হবে না । |
কর্মবাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্য
নিয়ম : কর্মবাচ্যের বাক্যকে কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তিত করতে হলে-
(১) কর্তায় প্রথমা, কর্মে দ্বিতীয়া বা শূন্য বিভক্তি প্রযুক্ত হয় এবং (২) ক্রিয়া কর্তা অনুযায়ী হয়। যেমন
কর্মবাচ্য | |
হালাকু খাঁ কর্তৃক বাগদাদ বিধ্বস্ত হয়। | হালাকু খাঁ বাগদাদ ধ্বংস করেন। |
দস্যুদল কর্তৃক গৃহটি লুণ্ঠিত হয়েছে। | দস্যুদল গৃহটি লুণ্ঠন করেছে। |
ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্য
নিয়ম : ভাববাচ্যের বাক্যকে কর্তৃবাচ্যে রূপান্তরিত করতে হলে-
(১) কর্তায় প্রথমা বিভক্তি প্রযুক্ত হয় এবং (২) ক্রিয়া কর্তার অনুসারী হয়। যেমন-
ভাববাচ্য | কর্তৃবাচ্য |
তার যেন আসা হয় ৷ | সে যেন আসে। |
তোমাকে হাঁটতে হবে। | তুমি হাঁটবে। |
কর্মকর্তৃবাচ্য কাকে বলে
যে বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয় হয়ে বাক্য গঠন করে, তাকে কর্মকর্তৃবাচ্যের বাক্য বলা হয়। যেমন—
সুতি কাপড় অনেক দিন টেকে। |
কাজটা ভালো দেখায় না । |
আরো পড়ুন:- বাক্য কাকে বলে | সরল, যৌগিক, জটিল বা মিশ্র বাক্য