২০১৪ সালে তিনি পর্নোগ্রাফি শিল্পে পা রাখেন এবং খুব দ্রুত জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছান। বিশেষ করে হিজাব পরা একটি ভিডিওর জন্য। মাত্র তিন মাস পর তিনি পর্ন শিল্প থেকে অবসর নেন। আজকের আর্টিকেলে আমরা মিয়া খলিফার জীবন ইতিহাস, মিয়া খলিফার ফেসবুক আইডি এবং মিয়া খলিফার খবর জানতে পারবো।
তার ক্যারিয়ারে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্ম-কান্ডের জন্য তিনি ইন্টারনেট সেলিব্রেটি হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বর্তমানে মিয়া খলিফা ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন।
মিয়া খলিফার ইতিহাস
মিয়া খলিফাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর।
- মিয়া খলিফা কি মুসলিম? না, মিয়া খলিফা মুসলিন নয়। তবে এটি স্পষ্ট যে তিনি ধর্মীয়ভাবে বেশ উদার মনোভাব পোষণ করেন এবং বর্তমানে নিজেকে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী হিসেবে চিহ্নিত করেন না। বর্তমানে তিনি কোন ধর্ম অনুসরণ করেন তা তিনি কখন বলেননি।
- মিয়া খলিফা কে? মিয়া খলিফা একজন পর্ন স্টার।
- মিয়া খলিফার জন্ম কোথায়? লেবাননের বৈরুতে।
- মিয়া খলিফার ধর্ম কী? মিয়া খলিফা একটি ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি নিজেকে নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের অনুসারী হিসেবে প্রকাশ করেননি।
- মিয়া খলিফা অর্থ কি? “খলিফা” একটি আরবী শব্দ, যার মানে “আবিষ্কারক”, “নেতা”, “পরবর্তী” বা “ধর্মীয় নেতা” হতে পারে।
- মিয়া খলিফা কোন দেশের নাগরিক? মিয়া খলিফা লেবাননের জন্মগ্রহণকারী, তবে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
- মিয়া খলিফা মানে কি? মিয়া খলিফা একজন সাবেক পর্নোগ্রাফি অভিনেত্রী এবং বর্তমানে তিনি ক্রীড়া ভাষ্যকার
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
মিয়া খলিফা ১৯৯৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি লেবাননের বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষিণ লেবাননের সংঘাতের কারণে তিনি ২০০১ সালে পরিবারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তিনি বৈরুতের একটি ফরাসি বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন এবং সেখানে ইংরেজি শেখেন। যুক্তরাষ্ট্রে এসে মেরিল্যান্ডের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং ল্যাক্রোসি খেলেন।
মিয়া তার শৈশবে উত্যক্ত ও বৈষম্যের শিকার হন, যা ১১ সেপ্টেম্বর হামলার পরে আরও তীব্র হয়। ম্যাসানুনটেন মিলিটারি একাডেমিতে খণ্ডকালীন পড়াশোনা শেষে তিনি টেক্সাসে যান এবং ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট এল পাসো থেকে ইতিহাসে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
মিয়া খলিফার পেশা
তার কর্মজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন। ২০১৪ সালে মিয়ামিতে হাঁটার সময় প্রাপ্তবয়স্ক (পর্ন ) চলচ্চিত্র শিল্পে কাজের প্রস্তাব পাওয়ার মাধ্যমে তিনি এই শিল্পে প্রবেশ করেন। তবে একটি হিজাব পরিহিত দৃশ্য তাকে তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তা এবং সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে। মাত্র তিন মাস এই পেশায় কাজ করার পর তিনি এটি ছেড়ে দেন।
তিনি জানান, পর্ন শিল্পে তার কাজ তাকে অনাকাঙ্ক্ষিত খ্যাতি দিলেও এটি তার জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। ২০১৯ সালে তিনি প্রকাশ করেন যে, এই শিল্প থেকে তার আর্থিক লাভ ছিল সীমিত। বর্তমানে তিনি ওয়েবক্যাম মডেলিং এবং অন্যান্য পেশায় কাজ করেন। মিয়া খলিফা নারীর অধিকার ও মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীলতার বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন, যদিও তার সিদ্ধান্তগুলি তার পরিবার ও নিজ দেশ থেকে বিচ্ছিন্নতা ডেকে এনেছে।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষ কে
পর্নোগ্রাফি থেকে অবসর
পর্নোগ্রাফি থেকে সরে আসার পর, মিয়া খলিফা মিয়ামিতে প্যারালিগাল এবং বুককিপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম ব্যক্তিত্ব, ওয়েবক্যাম মডেল, এবং ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে কর্মজীবন গড়েন। ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা, টুইচ লাইভ স্ট্রিমিং, এবং প্যাট্রিয়নের মাধ্যমে একচেটিয়া সামগ্রী বিক্রি করেন। খলিফা “আউট অব বাউন্ডস” এবং “স্পোর্টসবল”-এর মতো ক্রীড়া অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবেও কাজ করেছেন।
২০১২ সালে বিবিসি হার্ডটকের এক সাক্ষাৎকারে, তিনি পর্ন শিল্পের নেতিবাচক প্রভাব এবং গোপনীয়তার ক্ষতি নিয়ে কথা বলেন। তার কর্মজীবনের পরিবর্তন তাকে বিভিন্ন নতুন ভূমিকা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে
মিয়া খলিফার ব্যক্তিগত জীবন
মিয়া খলিফা ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, মাত্র ১৮ বছর বয়সে তার বিদ্যালয়ের প্রেমিককে বিয়ে করেন। তবে, ২০১৬ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। পর্নোগ্রাফি কর্মজীবনের সময় তিনি ফ্লোরিডার মিয়ামিতে বসবাস করতেন এবং পরে টেক্সাসে চলে যান।
তিনি ফ্লোরিডা স্টেট সেমিনোলস ফুটবলের একজন অনুরাগী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ক্রীড়া দলগুলিকে সমর্থন করতেন। কর্মজীবন পরিবর্তনের পর, তিনি ওয়াশিংটন, ডি.সি.-তে স্থায়ী হন এবং ওয়াশিংটন রেডস্কিন্স, উইজার্ডস, এবং ক্যাপিটালস-এর মতো পেশাদার ক্রীড়া দলগুলির সক্রিয় সমর্থক হন।
সামাজিক মাধ্যমে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে পৌঁছায়, টুইটারে ২.৩ মিলিয়ন এবং ইনস্টাগ্রামে ১১ মিলিয়নেরও বেশি অনুগামী অর্জন করেন। তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ভক্ত এবং ২০১৯ সালে তাদের খেলা চলাকালীন একটি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
২০১৯ সালে, মিয়া সুইডিশ রন্ধনশিল্পী রবার্ট স্যান্ডবার্গের সঙ্গে প্রণয়ে আবদ্ধ হন এবং সেই বছরের মার্চে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়। যদিও, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে তাদের বিবাহ স্থগিত থাকে।
বর্তমানে মিয়া খলিফা লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাস করছেন। তার জীবন ক্রীড়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত, যেখানে তিনি তার উপস্থিতি এবং কার্যক্রমের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর বয়স কত
মিয়া খলিফার ফেসবুক আইডি
বর্তমানে মিয়া খলিফা একজন ক্রীড়া ভাষ্যকার, ওয়েবক্যাম মডেল এবং জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ব্যক্তিত্ব হিসেবে কাজ করছেন। তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন অনুসারী রয়েছে, যা তার অনলাইন জনপ্রিয়তা এবং প্রভাবের পরিচায়ক।
মিয়া খলিফার ফেসবুক আইডি লিং এখানে ক্লিক করুন।
- মিয়া খলিফার টিকটক আইডি: মিয়া খলিফার অফিসিয়াল টিকটক আইডিতে এ৩৮.৯ মিলিয়ন অনুসারী এবং ৬৪৫.৯ মিলিয়ন লাইক রয়েছে। তিনি তার টিকটক অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন বিষয়বস্তু শেয়ার করেন, যা তার ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়।
- মিয়া খলিফার অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তিনি নিয়মিত তার ব্যক্তিগত জীবন, মডেলিং, ভ্রমণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়বস্তু শেয়ার করেন। তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৮ মিলিয়ন অনুসারী রয়েছে।
মিয়া খলিফা, যদিও একজন সাবেক প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত, তবুও তিনি তার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু উল্লেখযোগ্য ভালো কাজ করেছেন। এগুলো মূলত সামাজিক সচেতনতা, মানবাধিকার ইস্যু এবং জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ড।
মিয়া খলিফা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান সময়ে নিজের প্ল্যাটফর্মকে ভালো কাজের জন্য ব্যবহার করছেন। বর্তমানে তার কর্মকাণ্ড অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে এবং সামাজিক পরিবর্তনের একটি উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ