বাংলাদেশের শিক্ষাজীবনে এসএসসি পরীক্ষা শেষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো কলেজ ভর্তি। বিশেষ করে সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রতিযোগিতা প্রতিবছরই বাড়ছে। অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানতে চান ২০২৫ সালে সরকারি কলেজে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট প্রয়োজন হবে ? তবে এখানে মনে রাখতে হবে, সরকারি কলেজে ভর্তির পয়েন্ট বা গ্রেড নির্দিষ্ট করে কোনো একক মানদণ্ড নেই। এটি নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয় ও প্রতিযোগিতার মাত্রার ওপর। তাই ২০২৫ সালের ভর্তি প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় পয়েন্ট, পছন্দ নির্বাচন, গ্রুপ পরিবর্তনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিচে বিস্তারিতভাবে সাজানো হলো।
সরকারি কলেজে ভর্তির মূল প্রক্রিয়া ২০২৫
২০২৫ সালে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইনে সম্পন্ন হবে। সাধারণত শিক্ষার্থীরা xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারে। আবেদন করার সময় শিক্ষার্থীরা ৫–১০টি কলেজ পর্যন্ত পছন্দক্রমে যুক্ত করতে পারে। এ সময় আপনার মেধা, গ্রেড এবং পছন্দের ক্রম অনুযায়ী আপনাকে কলেজে মনোনীত করা হবে।
আবেদন করার সময় যা যা প্রয়োজন
- এসএসসি রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর
- বোর্ড ও পাশের সাল
- বৈধ মোবাইল নম্বর
- আবেদন ফি (সাধারণত ১৫০–২২০ টাকা)
সরকারি কলেজে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগবে ২০২৫
এখন আসা যাক মূল প্রশ্নে ২০২৫ সালে সরকারি কলেজে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট প্রয়োজন হবে ?
এখানে একটি বিষয় স্পষ্টভাবে জানা জরুরি বিষয়টি হচ্ছে, সরকারি কলেজে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্থায়ী পয়েন্ট নির্ধারণ করা থাকে না। প্রতি বছর যে কলেজে যত বেশি আবেদন পড়ে এবং যার আসন যত কম সেই কলেজের প্রতিযোগিতা তত বেশি হয়। ফলে সেই কলেজে ভর্তির “ন্যূনতম পয়েন্ট” বা “Lowest GPA” তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে। তাহলে আশা করি আপনারা সরকারি কলেজে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন আরও জানতে নিচের সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
ভর্তি পয়েন্ট নির্ভর করে যে মূল বিষয়গুলোর ওপর:
- কলেজের ক্যাটাগরি – ঢাকার সরকারি কলেজ বনাম জেলা/উপজেলার কলেজ
- আসনের সংখ্যা – যে কলেজে আসন কম, সেখানে পয়েন্ট বেশি লাগে
- শিক্ষার্থীর গ্রুপ – বিজ্ঞান গ্রুপে সাধারণত পয়েন্ট বেশি লাগে
- স্থানীয়তা ও জনপ্রিয়তা – শহরের জনপ্রিয় কলেজে প্রতিযোগিতা বেশি
- কোটা – প্রযোজ্য হলে কোটা ভেদে পয়েন্টের ভিন্নতা থাকে
সাধারণ অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সম্ভাব্য পয়েন্ট
(নোট: এটি সম্ভাব্য গড় ধারণার ওপর ভিত্তি করে, চূড়ান্ত নয়।)
ঢাকা শহরের সরকারি কলেজ (উচ্চ প্রতিযোগিতা)
- বিজ্ঞান: GPA 4.90 – 5.00
- ব্যবসায় শিক্ষা: GPA 4.50 – 5.00
- মানবিক: GPA 4.40 – 5.00
বিভাগীয় শহরের সরকারি কলেজ
- বিজ্ঞান: GPA 4.50 – 5.00
- ব্যবসায় শিক্ষা: GPA 4.00 – 4.80
- মানবিক: GPA 3.80 – 4.50
জেলা/উপজেলার সরকারি কলেজ
- বিজ্ঞান: GPA 4.00 – 4.70
- ব্যবসায় শিক্ষা: GPA 3.50 – 4.20
- মানবিক: GPA 3.00 – 4.00
এখানে বোঝা যায়, ঢাকা ও বড় শহরের জনপ্রিয় সরকারি কলেজগুলোতে পয়েন্ট তুলনামূলকভাবে বেশি প্রয়োজন হয়, আর উপজেলা পর্যায়ে অপেক্ষাকৃত কম পয়েন্টেও ভর্তি হওয়া যায়।
সরকারি কলেজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ টিপস
সরকারি কলেজ যে যারা ভর্তি হবেন তাদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু জানেন না যে সরকারি কলেজে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগে। তাদের জন্যই আজকের এই পোস্টটি লেখা এছাড়াও নিচে আরও সরকারি কলেজের ভর্তির ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
পছন্দ নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ
পছন্দ ক্রমানুসারে আপনাকে কলেজে মনোনয়ন দেওয়া হবে। তাই সবচেয়ে পছন্দের এবং বাস্তবসম্মত কলেজগুলো শুরুতেই রাখতে হবে। শুধুমাত্র নাম শুনে কলেজ বাছাই করলে সুযোগ হারানোর সম্ভাবনা থাকে।
গ্রুপ পরিবর্তন কাকে বলা হয়?
- বিজ্ঞান → মানবিক/ব্যবসায় : পারা যায়
- ব্যবসায় → মানবিক : পারা যায়
- মানবিক → বিজ্ঞান : সম্ভব নয়
এক্ষেত্রে গ্রুপ পরিবর্তন করলে ভর্তি পয়েন্টের প্রতিযোগিতায় অবস্থান কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
জনপ্রিয় কলেজ মানেই সবার জন্য সেরা নয়
আপনার বাসা থেকে দূরত্ব, ভ্রমণ সময়, টিউশন ও শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে কলেজ নির্বাচন করুন। শুধু যে আপনার সরকারি কলেজ হলেই লেখাপড়ার গুণগত মান বা আনুষাঙ্গিক কারো বিষয়ে রয়েছে সেগুলো ভালো হবে বিষয়টি কিন্তু তা নয় সবকিছু বিবেচনা করে নিজের উপর। আপনি আপনার মেধা কে কতটুকু কাটাতে পারছেন বা কত দূরে গিয়ে যেতে পারবেন সেটা আপনার উপর নির্ভর করে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের সুযোগ
যদি প্রথম মেধাতালিকায় স্থান না পান, তবে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ধাপে আবার আবেদন ও পরিবর্তনের সুযোগ থাকে।
২০২৫ সালে সরকারি কলেজে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট প্রয়োজন হবে এর একক নির্দিষ্ট উত্তর নেই। তবে আগের বছরের প্রবণতা অনুযায়ী বলা যায়, বড় শহরগুলোতে (বিশেষ করে ঢাকা মহানগর) ভর্তির জন্য পয়েন্ট বেশি লাগে, আর উপজেলাগুলোতে পয়েন্ট কিছুটা কম হয়। আপনার মেধা, গ্রুপ, কলেজের অবস্থান, আসন সংখ্যা এবং পছন্দক্রম সব মিলিয়ে চূড়ান্ত ফল নির্ধারণ করা হয়।





