এ আর্টিকেলের মাধ্যেমে জানতে পারবে ব্যবস্থাপনা কাকে বলে, আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার জনক, বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে এবং ব্যবস্থাপনার নীতি বা আদর্শ সমূহ।
ব্যবস্থাপনা
ব্যবস্থাপনা শব্দটি ইংরেজি ‘Management’ শব্দের প্রতিশব্দ। ইংরেজি এ শব্দটি ল্যাটিন বা ইতালীয় ’Maneggiare’ শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো ‘to trained up the horses’ অর্থাৎ অশ্বকে প্রশিক্ষিত করে তোলা বা পরিচালনার উপযোগী করে তোলা।
তাই ব্যবস্থাপনা হলো কোন প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য এতে নিয়োজিত বিভিন্ন উপায় উপকরণ, যেমন মানুষ যন্ত্রপাতি, মালামাল, অর্থ, বাজার ও পদ্ধতি যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করা।
ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞা
রু ও বায়ার্স- এর মতে, অন্যদের দ্বারা কর্য করিয়ে নেয়াই ব্যবস্থাপনা।
হেনরি ফেওল এর মতে, ব্যবস্থাপনা হলো পূর্বানুমান ও পরিকল্পনা করা, সংগঠিত করা, আদেশ নির্দেশ দেওয়া, সমন্বয়সাধন এবং নিয়ন্ত্রণ করা।
ট্যরি এ্যান্ড ফ্রাঙ্কলিন এর মতে, ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া যা মানুষ ও অন্যান্য সম্পদসমূহের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও তা অর্জনের নিমিত্তে পরিকল্পনা, সংগঠন, উদ্ধুদ্ধকরণ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
আরো পড়ুন:-
ব্যবস্থাপক কে
ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনরত বা দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তিকে ব্যবস্থাপক বলে।
আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক
আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হচ্ছে- হেনরি ফেওল।
হেনরি ফেওলকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয়ে কেন
ব্যবস্থাপনাকে গতানুগতিক ধারণার বাইরে এনে একে একটা আধুনিক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যিনি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন তিনি হলেন ফ্রান্সে জন্ম গ্রহণকারী হেনরি ফেওল। তিনি একজন খনি প্রকৌশলী হিসেবে ১৮৬০ সালে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৮৮৮ সালে খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত হন।
১৯১৮ সালে অবসর নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি তার যোগ্যতা বলে এই প্রতিষ্ঠানকেই শুধুমাত্র দেউলিয়াত্বের হাত থেকে রক্ষা করেননি ব্যবস্থাপনাকে একটি গুরত্বপূর্ণ শাস্ত্র হিসেবে অনুধাবন করেন।
হেনরি ফেওল ১৯১৬ সালে “General and industrial administration” নামে গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তিনি তার গ্রন্থে ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বৈপ্লাবিক চিন্তাধারার কথা উপস্থাপন করেন।
১) ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের একটি পৃথক শাখা। যা সকল ধরণের দলভিত্তিক কর্মকান্ডের ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য।
২) একটি পূর্ণাঙ্গ ও ব্যাপকভিত্তিক ব্যবস্থাপনা তত্ত্ব যা সকল প্রতিষ্ঠানে প্রয়োগ করা যায় ও
৩) কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের পাঠ্যক্রমে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
ব্যবস্থাপনাকে একটি আধুনিক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ, ব্যবস্থাপনার কাজ, ব্যবস্থাপনার নীতিমালা, ব্যবস্থাপকের গুণাবলি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় এ গ্রন্থে উল্লেখ করেন। হেনরি ফেওলের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তার সফল প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার জন্য তাকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয়।
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক হচ্ছে- এফ ডব্লিউ টেলর
ব্যবস্থাপনার নীতি বা আদর্শ
আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেওল ১৯১৬ সালে তার “General and industrial administration” গ্রন্থে ব্যবস্থাপনার ১৪ টি নীতির কথা বলেছেন। সেগুলো হচ্ছে-
১। কর্য বিভাগ বা কার্য বিভাজন
২। কর্তৃত্ব ও দায়িত্বে সমতা রক্ষণ
৩। নিয়মানুবর্তিতা
৪। আদেশের ঐক্য
৫। নির্দেশনার ঐক্য
৬। সাধারণ স্বার্থে নিজস্ব স্বার্থ ত্যাগ
৭। পারিশ্রমিক
৮। কেন্দ্রীকরণ
৯। জোড়া মই শিকল
১০। শৃঙ্খলা
১১। সাম্যতা
১২। কর্মীদের চাকরির কালের স্থায়িত্ব বিধান
১৩। উদ্যোগ
১৪। একতাই বল
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
একটা প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত জনশক্তির ব্যবস্থাপনাকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলে।
প্রতিষ্ঠানের জন্য দক্ষ্য ও যোগ্য কর্মীবাহিনী সংগ্রহ, নির্বাচন এবং তাদের সম্পদে পরিণত করে লক্ষার্জনে কাজে লাগানোর ব্যবস্থাপকীয় কার্যক্রমকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলে।
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার জনক
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার জনক হচ্ছে- জর্জ এলটন মেয়ো।