বাংলাদেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ সরকারি কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (Sher-e-Bangla Agricultural University), যা ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, ব্যবসায় প্রশাসন ও বিভিন্ন প্রযুক্তিনির্ভর বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানকারী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করে থাকে। তাই ২০২৫ সালের ভর্তি পরীক্ষার আগে অনেকেই জানতে চান শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগবে ২০২৫ সালে? আজকের এই পোস্টে আমরা সেই প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তরসহ ভর্তি প্রক্রিয়া, যোগ্যতা ও প্রস্তুতির টিপস নিয়ে আলোচনা করব।
শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যোগ্যতা
শেরে-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যোগ্যতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই কারণ কেউ হয়তোবা এই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য এর তথ্যগুলো জানতে চাচ্ছেন আবার কেউ হয়তোবা চাকরির ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো জানতে চাচ্ছেন। তো যাই হোক শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে প্রার্থীদের নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলো থাকতে হবে:
- শিক্ষাগত যোগ্যতা:
- বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৭.০০ থাকতে হবে (৪র্থ বিষয়সহ)।
- কোনো এক পরীক্ষায় জিপিএ ৩.০০ এর নিচে হলে আবেদন করা যাবে না।
- বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতা:
- এইচএসসি স্তরে জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিত বিষয়ে থাকতে হবে।
- এসব বিষয়ে ভালো ফলাফল ভর্তি পরীক্ষায় অতিরিক্ত সুবিধা এনে দেয়।
শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগবে ২০২৫
শেরে-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগে এ বিষয়টি কিন্তু অনেকেরই অজানা তাই এ বিষয়গুলো জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিজিট করে থাকে। তো আপনাদের জন্য নিচে শখের মাধ্যমে এই শেরে-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পয়েন্টের একটি টেবিল তৈরি করে সেখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। ২০২৫ সালে ভর্তি যোগ্যতা ও প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে
| অনুষদ | সম্ভাব্য সর্বনিম্ন জিপিএ (এসএসসি + এইচএসসি) | মন্তব্য |
|---|---|---|
| কৃষি অনুষদ | ৭.৫০ – ৮.০০ | সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ |
| কৃষি ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (Agri Business Management) | ৭.২৫ – ৭.৭৫ | ব্যবসা ও কৃষির সমন্বয় |
| ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স | ৭.৪০ – ৭.৮০ | উচ্চ কাট-অফ পয়েন্ট |
| মৎস্য অনুষদ | ৭.০০ – ৭.৫০ | তুলনামূলক কম প্রতিযোগিতা |
উল্লেখ্য, এই পয়েন্টগুলি গত কয়েক বছরের ভর্তি প্রবণতা ও অনুমিত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর পরীক্ষার মান ও আবেদনকারীর সংখ্যা অনুযায়ী এই সীমা কিছুটা বাড়তে বা কমতে পারে।
শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি
বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই জানতে পারে কারণ এ ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে জানা অত্যন্ত জরুরী। ২০২৫ সালে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার (Cluster Admission System) আওতাভুক্ত থাকবে। অর্থাৎ, কৃষি-ভিত্তিক ৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
- পরীক্ষার বিষয়: পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গণিত
- মার্কস: মোট ১০০
- পাস মার্ক: কমপক্ষে ৪০
- সময়: ১ ঘণ্টা
- নেতিবাচক মার্কিং: প্রতি ভুল উত্তরে ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে
শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদ ও বিভাগ
শেরে-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও বিভাগ এর কিছু আলাদা আলাদা বিষয় রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিত আপনাদের সুবিধার্থে তুলে ধরা হলো। যাতে আপনাদের এ বিষয়গুলো জানতে সুবিধা হয়। শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে নিচের অনুষদগুলো চালু আছে।
- কৃষি অনুষদ
- কৃষি ব্যবসা ব্যবস্থাপনা অনুষদ
- ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদ
- মৎস্য অনুষদ
প্রতিটি অনুষদের অধীনে আধুনিক ল্যাবরেটরি, গবেষণা সুবিধা এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করা হয়।
শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তুতির পরামর্শ
যারা শেরে-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কিছু পরামর্শমূলক প্রস্তুতি বিষয়ে জানতে চান তাদের জন্য নিচে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো। নিজ থেকে একটু খেয়াল করে বিষয়গুলো জেনে নিন আশা করি আপনাদের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কাজে লাগবে। শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে নিচের বিষয়গুলোতে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি
- জীববিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়া
- বিগত বছরের গুচ্ছ ভর্তি প্রশ্ন অনুশীলন করা
- সময় ব্যবস্থাপনা ও মডেল টেস্টে অংশগ্রহণ করা
- সর্বশেষ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেখা
২০২৫ সালে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পয়েন্টের প্রয়োজন হবে আনুমানিক ৭.০০ থেকে ৮.০০ এর মধ্যে, যা প্রার্থীর ফলাফল ও প্রতিযোগিতার মাত্রার ওপর নির্ভর করবে। যারা বিজ্ঞান বিভাগে ভালো ফলাফল করেছে এবং কৃষি বা প্রাণীসম্পদ নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে সেরা গন্তব্য।





